1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডুইসবুর্গের লাভ প্যারেডে ভিড়ের চাপে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু

২৫ জুলাই ২০১০

লাভ প্যারেডের কনসার্ট উপলক্ষে ডুইসবুর্গের পুরনো রেলওয়ে সাইডিং চত্বরে ভিড় করে ছিল দশ লক্ষের বেশী তরুণ তরুণী৷ কিন্তু এলাকাটিতে ঢোকার পথে একটি টানেলের মুখে চাপাচাপি এবং আতঙ্কের সৃষ্টি হয়৷

https://p.dw.com/p/OTvm
Duisburg
আহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছেছবি: picture-alliance/dpa

বিনষ্ট হয় অন্তত ১৯টি তরুণ প্রাণ৷ আহতের সংখ্যা ৩৫০-এর কাছাকাছি, বলে শেষমেষ জানিয়েছে পুলিশ৷ একাধিকের এখনও জীবনাশঙ্কা রয়েছে৷ নিহতদের অধিকাংশকে অকুস্থলে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ দুর্ঘটনা ঘটে স্থানীয় সময় বিকেল ছ'টা নাগাদ৷ দুর্ঘটনার পরেও কিন্তু লাভ প্যারেড কনসার্ট চালু রাখা হয়, যা'তে আরো আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়৷ ন'টি হেলিকপ্টার এবং ডজন-ডজন এ্যাম্বুলেন্স দেখাশুনা করে আহতদের৷ পুলিশ নিযুক্ত রয়েছে প্রায় ছয় হাজার৷ নিকটস্থ মোটরওয়ে বন্ধ করে সেখানেই তাঁবুতে আহতদের প্রাথমিক পরিচর্যা করা হয়েছে৷ পরের দিকে মোটরওয়ের তরফের বেড়া খুলে লোকজনদের সেদিক দিয়েও বেরুনোর ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

Duisburg
লাভ প্যারেডের একাংশছবি: AP

অভিশপ্ত টানেল

ডুইসবুর্গের মতো ছোট শহরে, বিশেষ করে পুরনো রেলওয়ে চত্বরে, যেখানে বিভিন্ন বিবৃতি অনুযায়ী বস্তুত ৫০,০০০ লোক ধরে, সেখানে কমপক্ষে দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশের ব্যবস্থা করতে গিয়ে সব রকমের সাবধানতাই নেওয়া হয়েছিল, বলছেন কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞরা৷ বিশেষ করে সাময়িক তারের বেড়ার মাধ্যমে জনস্রোতকে ঠিক দিকে চালু করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সাধারণত পুলিশ যেমন করে থাকে৷ কিন্তু মুশকিল হল, কনসার্ট স্থলে প্রবেশের একমাত্র পথ ছিল একটি প্রায় ২০ মিটার প্রস্থের ও ২০০ মিটার লম্বা টানেল পেরিয়ে - এবং কনসার্ট প্রাঙ্গণ পুরোপুরি ভর্তি দেখে পুলিশ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নতুন অতিথিদের প্রবেশই বন্ধ করে দিয়েছিল৷

কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটে

কিন্তু অতিথি আসা তখনও বন্ধ হয়নি৷ ফলে টানেলের ভিতরে মানুষের চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকে৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী কিছু মানুষ গরমে এবং আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন৷ ওদিকে টানেলের মুখেও জনতা তারের বেড়া ঠেলে ফেলে সুড়ঙ্গের ঢাল বেয়ে এবং একটি রেলিং ছাড়া সিঁড়ি দিয়ে ওপরে যাবার চেষ্টা করে - যদি সে'পথে কনসার্ট প্রাঙ্গণে পৌঁছনো যাওয়া যায়৷ এভাবে যারা ওপরে ওঠার চেষ্টা করছিল, তাদের মধ্যেও কিছু লোক আট-দশ মিটার উচ্চতা থেকে নীচে পড়ে প্রাণ হারিয়ে থাকতে পারে - প্রত্যক্ষদর্শীদের এবং হাসপাতালের ডাক্তারদেরও সেরকম কথা বলতে শোনা গেছে৷

tunnel
টানেলে দুর্ঘটনার পরছবি: AP

ভাগ্য, না ভুল?

বার্লিনে লাভ প্যারেড বাতিল হয়ে যাবার পর ডুইসবুর্গকে বাছার একটি কারণ ছিল সম্ভবত নিকটস্থ হল্যান্ড এবং বেলজিয়াম থেকে বহু লাভ প্যারেড ফ্যানদের এখানে আসার সম্ভাবনা৷ দ্বিতীয়ত, উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা কি ছিল, তা' জানা নেই, কিন্তু বর্তমানে মিডিয়ার তরফ থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষের সমাগমের কথা শোনা যাচ্ছে৷ তৃতীয়ত, টিভি'তে টানেলটির ছবি দেখলেই উপলব্ধি করা যায় যে, এখানে ঐ গরমের মধ্যে হাজার মানুষের ভিড়ে ঘণ্টা দুয়েক ধরে আটকে পড়ার ফল এবং আতঙ্ক কিরকম হতে পারে৷ চতুর্থ, টানেলে আটকে পড়া প্রত্যক্ষদর্শীরাই জানাচ্ছে, ওভারলোডিং-এর ফলে মোবাইল কাজ করছিল না৷

প্রতিক্রিয়া

জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে, সকলেই মর্মাহত৷ ভুলফ ঘটনাটিকে একটি বিপর্যয় বলে বর্ণনা করে তার কারণ অনুসন্ধানের দাবী জানিয়েছেন৷ অপরদিকে নর্থ রাইন ওয়েস্ট ফালিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হানেলোরে ক্রাফ্ট এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেও কনসার্ট চালু রাখার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম