1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

জার্মানিতে মাংসের উপর পশুকল্যাণ ছাপের পরিকল্পনা

২৮ মার্চ ২০১৮

মাংস কেনার সময় আশি ভাগের বেশি জার্মান পশুকল্যাণের জন্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দাম দিতে প্রস্তুত৷ বাজারে কেনা মাংস যে সত্যিই সেরকম খামার থেকে এসেছে, তার সার্টিফিকেট দেবেন সরকার – পরিকল্পনা আপাতত সেরকমই৷

https://p.dw.com/p/2v8Fq
Beef Stroganoff mit Nudeln
ছবি: Colourbox/M. Antonino

সুপারমার্কেটে খাবার-দাবার বিভাগে গেলেই চোখে পড়বে, প্যাক করা বা না-করা মাংসের জন্য নানা ধরণের তকমা – তাদের সকলেরই উদ্দেশ্য হলো, ক্রেতাকে জানানো, ঠিক কোন ধরনের পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট পশুটিকে পালা হয়েছে৷ ওদিকে নিত্যনতুন ছাপ বাজারে আসছে৷ কাজেই জার্মান গ্রাহকদের পক্ষে বোঝা দায়, তাঁরা যে যৎসামান্য হলেও, কিছুটা বেশি মূল্য ধরে দিচ্ছেন, সেটা বাস্তবিক গৃহপালিত পশুদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে কিনা৷

 শাকসবজির ক্ষেত্রে যা অরগ্যানিক, মাংস বা ডিমের ক্ষেত্রে তা পশুকল্যাণ৷ আজ অনেকদিন হলো, পশ্চিমে কৃষি একটি ‘শিল্পে' পরিণত হয়েছে৷ হাজার হাজার মুরগির খামার; শত শত গরু বা শূকরের খামার; ব্যাপক হারে ডিম ও মাংস ও অন্যান্য আমিশ খাদ্যপণ্য উৎপাদন৷ একদিকে পশুপালন, অন্যদিকে পশু পরিবহণ ইউরোপে যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, পরিবেশ সচেতন আধুনিক জার্মানদের কাছে তা আর গ্রহণযোগ্য নয়৷ কাজেই তাঁরা আরো বেশি পশুকল্যাণ দেখতে চান ও সেজন্য বেশি মূল্য দিতেও প্রস্তুত৷

সুপারমার্কেট ও চেনস্টোরগুলি বহুদিন আগেই ক্রেতাদের এই ‘প্রস্তুতি' আঁচ করে, সেই অনুযায়ী তাঁদের পণ্যের উপর পশুকল্যাণ সংক্রান্ত তথ্য দিতে শুরু করেছে৷ কিন্তু মুশকিল এই যে, এত ধরনের কোম্পানি ও এত ধরনের লেবেল বাজারে এসেছে যে, সাধারণ গ্রাহকের পক্ষে তার মর্মোদ্ধার করা সম্ভব নয়৷ সেই কারণেই দাবি উঠেছে, সরকারের তরফ থেকে একটি স্ট্যান্ডার্ড ছাপের ব্যবস্থা করা হোক, কী ধরণের পশুপালন থেকে সুপারমার্কেট, চেইনস্টোর বা দোকানের মাংস এসেছে৷

দাবি উঠেছে বললে ভুল বলা হবে, কেননা, এ দাবি অনেকদিনের৷ নতুন কৃষিমন্ত্রী ইউলিয়া ক্ল্যোকনারের উত্তরসুরী ক্রিস্টিয়ান স্মিট (সিএসইউ)-এর আমল থেকেই খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘পশুকল্যাণ তকমা' নিয়ে কাজ চলেছে৷ জার্মান পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সমিতি বিইউএনডি, জার্মান গ্রাহক সুরক্ষা সমিতি, জার্মানির সবুজ দল ও গ্রিনপিস সংগঠনের জার্মান শাখা এবার সেই পশুকল্যাণ তকমার দাবিতে আরো সোচ্চার হয়ে উঠেছে৷ কাজেই হয়তো বাস্তবিক এবার মাংসের উপর পশুকল্যাণ ছাপ আসতে চলেছে৷

গ্রাহক, কৃষি, সরকার

ফেডারাল কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের খাদ্য প্রতিবেদন বলছে, জার্মান গ্রাহকদের ৮৭ শতাংশ পশুকল্যাণ কামনা করেন এবং তাঁদের ৮৮ ভাগ পশুকল্যাণের দায়ে পশুজাত পণ্যের জন্য বর্ধিত মূল্য দিতে প্রস্তুত৷ পশুকল্যাণ বলতে, খামারে পশু প্রতি কতটা জায়গা রাখতে হবে, মা পশুদের কতদিন বেঁধে রাখা চলবে, বাচ্চা পশুদের কতদিন মা'র কাছে থাকতে দেওয়া হবে ইত্যাদি নানা খুঁটিনাটির তালিকা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়৷ এসব অবশ্য এর আগের মহাজোট সরকারের আমলেও করা হয়েছিল৷ কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি৷ নতুন সরকারের জোট চুক্তিতেও নাকি পশুকল্যাণ ছাপের শর্তাবলী নির্ধারণ করার জন্য পাক্কা দু'বছর সময় রাখা হয়েছে৷ এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন সবুজ দলের সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান আন্টন হোফরাইটার৷

এছাড়া নতুন কৃষিমন্ত্রী ইউলিয়া ক্ল্যোকনার আগে থেকেই বলে রেখেছেন যে, সস্তা মাংস চিরকালই পাওয়া যাবে; পশুকল্যাণ ছাপের উদ্দেশ্য হবে, গ্রাহকরা যাতে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, কোন ধরনের মাংস কিনবেন৷ এবং কোন মূল্যে৷

পশুকল্যাণের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা অনেকদিনের৷ ২০১৫ সালের একটি ‘পশুকল্যাণ উদ্যোগ' অনুযায়ী, সুপারমার্কেটগুলি একটি তহবিলে অনুদান প্রদান করবে, যে অর্থে স্বেচ্ছায় পশুকল্যাণে উদ্যোগী খামারচাষিদের আর্থিক প্রেরণা দেওয়া হবে৷

এবার লিডল-এর মতো ডিসকাউন্টাররা তাদের নিজস্ব পশুকল্যাণ লেবেল বাজারে আনতে চলেছে৷ সে লেবেলের মান ও শর্তাবলীও হবে আলাদা৷ এভাবে যদি মাংসের উপর তকমা বাড়তে থাকে, তাহলে গ্রাহকরা সত্যিই ‘তকমার জঙ্গলে' পথ হারাতে পারেন বলে হোফরাইটারের আশঙ্কা৷

এসি/এসিবি (ডিপিএ, বিএমইএল)

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য