কোকাকোলার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ'
৬ এপ্রিল ২০১৮কোকাকোলাসহ অন্যান্য কোমল পানীয়ে নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি চিনি থাকলে সেই পানীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে ‘সুগার ট্যাক্স', অর্থাৎ চিনি কর আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন৷ ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশও সেই পথে হাঁটছে৷ পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড এবং এস্তোনিয়ার মতো দেশ রয়েছে সেই তালিকায়৷ ধারণা করা হচ্ছে, কোকাকোলার মতো বড় কোম্পানিগুলো ভোক্তার স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী না হলে অদূর ভবিষ্যতে তালিকাটি আরো দীর্ঘ হবে৷
বুধবার কোকাকোলা পানের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরতে বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ফুডওয়াচ৷ সংবাদ সম্মেলনে ১০৮ পৃষ্ঠার ‘কোকাকোলা রিপোর্ট'-ও প্রকাশ করেছে তারা৷ প্রতিবেদনে জার্মানিতেও কোকাকোলার বিরুদ্ধে চিনি কর আরোপের সুপারিশ করা হয়৷
কোকাকোলা জার্মানির গণসংযোগ কর্মকর্তা পাট্রিক কামারারকেও সংবাদ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি আসেননি৷ তাঁর নাম লেখা চেয়ারটি তাই ফাঁকা ছিল৷ ঠিক পাশের চেয়ারে বসেই কোকাকোলার কঠোর সমালোচনা করেন ফুডওয়াচের পরিচালক মার্টিন রুকার৷
তিনি বলেন, কোকাকোলা নিজেদের পণ্যের ক্ষতিকর দিকটিকে আড়াল করতে সিগারেট কোম্পানিগুলোর মতো কৌশল অবলম্বন করছে৷ সে কারণে কোকাকোলা রিপোর্টের প্রচ্ছদেও রাখা হয় মার্লবোরো সিগারেটের ‘মার্লবোরো ম্যান'-এর ছবি৷ তবে ছবির নীচে ‘মার্লবোরো ম্যান' না লিখে লেখা হয়েছিল ‘মারোলবোরো ম্যান'৷
কোকাকোলার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তারা ক্ষতিকর দিকের উল্লেখ না করে এমন কৌশলে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে যাতে শিশু-কিশোররা আকৃষ্ট হয়৷ কোকাকোলা জার্মানি অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ তাদের দাবি, কোকাকোলার প্রতিটি প্রচারনা মূলত ১২ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য৷
কিন্তু বার্লিনের সংবাদ সম্মেলনে মার্টিন রুকার কোকাকোলার এমন দাবিকে ‘অসত্য' বলে উড়িয়ে দেন৷ তিনি প্রশ্ন রাখেন, যদি শিশুদের আকৃষ্ট না করাই লক্ষ্য হবে তাহলে সান্টা ক্লজকেও কেন সাজানো হয় কোকাকোলার রঙে? কেন সান্টা ক্লজের গায়ে লেখা হয় কোকাকোলা? কেন ক্রিসমাসের উৎসবে ঘুরে বেড়ায় বড় করে কোকাকোলা লেখা ট্রাক? কেন শিশুদের মাঝে জনপ্রিয় ইউটিউব এবং ইন্সটাগ্রাম তারকাদের নামিয়ে দেয়া হয় কোকাকোলার প্রচারে?
এ সবের উত্তর দেয়নি কোকাকোলা জার্মানি৷ তবে ফুডওয়াচের সংবাদ সম্মেলনের আগে তারা নিজেদের কার্যালয়ে এক প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করে৷ সেখানে দাবি করা হয়, কোকাকোলা বেশি পান করলেই শিশুরা মুটিয়ে যায় – এই ধারণা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়৷ কোকাকোলা জার্মানির গনসংযোগ কর্মকর্তা কামারার জানতে চান, ফিনল্যান্ডের শিশুরা তো খুব কমই কোকাকোলা বা অন্যান্য কোমল পানীয় পান করে, সেখানেও কেন তাহলে শিশুদের মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা এত বেশি?
বেন নাইট/এসিবি