‘হাসতে হাসতে ভয়কে জয়’
৩০ জুন ২০১৪‘তথ্যপ্রাপ্তি থেকে অংশগ্রহণ: গণমাধ্যমের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো' – এই ‘মটো' নিয়ে জার্মানির বন শহরে শুরু হলো ডয়চে ভেলে আয়োজিত বার্ষিক মিডিয়া কনফারেন্স ‘গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম'৷
সোমবার সকালে বন শহরের সাবেক সংসদভবনে সম্মেলনের শুরুতেই ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ আশা প্রকাশ করলেন, প্রাণবন্ত বিতর্ক আর উৎসাহ জাগানিয়া আলোচনার জন্ম দিয়ে৷ বললেন, ‘গ্লোবাল মেডিয়া ফোরাম' হয়ে উঠবে ফলপ্রসূ৷
তাঁর কথায়, আজকের পৃথিবীতে বিভিন্ন রাষ্ট্র অবাধ তথ্য প্রবাহের পথ রুদ্ধ করতে চাইছে৷ তারা ‘সেন্সরশিপ' আরোপ করছে, হুমকি আর হয়রানির পথ বেছে নিচ্ছে এবং চালাচ্ছে নজরদারি৷ উইকিলিকস ও এডওয়ার্ড স্নোডেন রাষ্ট্রীয় নজরদারির সেই গোপন চিত্র প্রকাশ্যে আনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যেও ইন্টারেনেটর প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে৷
‘‘ইন্টারনেটকে আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই৷ বরং পৃথিবীকে বদলে দিতে এর বিপুল সম্ভাবনা আমাদের কাজে লাগাতে হবে৷''
লিমবুর্গের ভাষায়, আজকের পৃথিবীতে ইন্টারনেট পরিণত হয়েছে বিশ্বায়নের মেরদণ্ডে৷
কাউন্সিল অফ ইউরোপের মহাসচিব থর্বইয়র্ন ইয়াগলান্ড উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্যে নিউ মিডিয়ার গুরুত্ব এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন৷
তিনি বলেন, এডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গোপন নজরদারির তথ্য প্রকাশ্যে এনে দেখিয়ে দিয়েছেন, রাষ্ট্র কতোভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে পারে৷
ভয়কে জয়
মুক্তমতের চর্চার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তেক্ষেপের মিশরীয় চিত্রটি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সে দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক বাসেম ইউসেফ, সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে যাঁর ব্যাঙ্গাত্মক টিভি অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার মিশর সরকার সম্প্রতি বন্ধ করে দিয়েছে৷
মিশরে ভীতি সঞ্চার করে কীভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে এবং স্যাটায়ারের মাধ্যমে কীভাবে সেই ভয়কে জয় করা সম্ভব – সে কথাও উঠে এসেছে ইউসেফের বক্তব্যে৷
‘‘ভীতি খুবই শক্তিশালী অস্ত্র৷ ভয় দেখিয়ে মানুষকে তাঁদের সবচেয়ে বড় সম্পদ মানবতা থেকেও বিচ্যুত করা যায়৷''
‘‘ভয় দেখিয়ে দারুণ কাজ হয়, ভয় দেখিয়ে জয় পেতে আমরা দেখেছি....কিন্তু আমরা যখন হাসি, আমাদের ভয় উড়ে যায়....আর এইভাবে ভয়কে জয় করতে পারে ‘স্যাটায়ার'৷
ইউসেফের ভাষায়, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে হাস্যরসই হতে পারে সবচেয় ভালো ওষুধ৷
‘‘ভয়কে শেষ পর্যন্ত হার মানতেই হয়৷ জয় হয় সেই তরুণদের, যাঁরা ভয়ের কাছে নত হতে অস্বীকার করেছে৷''
৩০শে জুন থেকে ২রা জুলাই – গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামের তিন দিনের এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন ১০০ দেশের দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার, সাংবাদিক জেফ জার্ভিস এবং এডওয়ার্ড স্নোডেনের ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচিত সারা হ্যারিসনের মতো ব্যক্তিরা এর বিভিন্ন পর্বে আলোচনায় অংশ নেবেন৷
সম্মেলনের প্রথম দিনই ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড বা দ্য বব্স পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে পুরস্কার৷ আর দ্বিতীয় দিন বিকালে রাইনের বুকে হবে নৌকাবিহার৷