গাজায় ফিলিস্তিনি শিশুরা এখনো বিপর্যস্ত
২৯ জুন ২০০৯তাছাড়া যুদ্ধের ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইসরায়েল৷
গত ডিসেম্বরে পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতার আরো পরিষ্কার চিত্রের জন্য আর বোধহয় বেশি অপেক্ষা করতে হবে না৷ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সোমবার থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্তে যু্দ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সাক্ষ্য নেয়া শুরু করেছে৷ প্রথম দিনেই কমিশন শুনেছে, বেশ কিছু ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা৷ যুদ্ধে পা হারানোয় হুইল চেয়ার নেয়া এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, কী করে ইসরায়েলি বোমা তার ঘরটাকে এক মুহূর্তে প্রায় ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে পরিবারের ১১ জন সদস্যকে চিরতরে কেড়ে নিয়েছে৷ আরেকজন জানালেন, এক মসজিদের ভেতরে কীভাবে ১৭টি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল৷
ইসরায়েলি হামলার পরও গাজা উপত্যকায় যারা বেঁচে আছেন তারাও এখন দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন৷ ২০০৭ সালে হামাস শাসনভার নেয়ার পর থেকেই গাজায় চলছে ইসরায়েল এবং মিশরের নিষেধাজ্ঞা৷ রেডক্রস জানিয়েছে, ২২ দিনের হামলা শেষে ইসরায়েলি বাহিনী ৬ মাস আগে চলে এলেও এখনো গাজায় মানবিক সাহায্য নিয়ে ঢোকা যাচ্ছেনা৷এমনকি ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, স্কুল ইত্যাদি মেরামতের সামগ্রীও ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি সেনাবাহিনী৷পানির পাইপ, সিমেন্ট, ব্যথানিরোধক ওষুধ, এক্সরে ফিল্ম ইত্যাদির অভাবে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে৷ এ অবস্থায় পশ্চিম তীর ও গাজার ওপর থেকে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার দাবি করেছে রেড ক্রস৷
ওদিকে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থদের সাক্ষ্য নিতে গিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন দেখেছে, গাজায় শিশুরা এখনো ভালো নেই, চরম দুর্দশা আর আতঙ্কের মধ্যে জীবন যাপন করছে তারা৷ কারো কারো জন্য যুদ্ধ সৃষ্টি করেছে মনস্তাত্বিক সমস্যা৷ ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হওয়া ২২ দিনের এ হামলায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি এবং ১৩ জন ইসরায়েলি প্রাণ হারায়৷ যে শিশুরা এই হত্যাযজ্ঞ কাছ থেকে দেখেছে, তারা মানসিকভাবে এখনো খুব বিপর্যস্ত৷ শিশু মনরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ইয়াদ সারাজ মনে করেন, ২২ দিনের যুদ্ধে শিশুরা এত রক্তপাত আর হত্যার দৃশ্য দেখেছে যে ওই অভিজ্ঞতা তাদের নেতিবাচক অনুভূতি, জঙ্গীবাদ আর সন্ত্রাসের পথে নিয়ে যাচ্ছে৷ গাজার ১৫ লাখ মানুষের অর্ধেকেরও বেশির বয়স এখন ১৮র নিচে৷
প্রতিবেদক : আশীষ চক্রবর্ত্তী, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক