আশ্বস্ত হতে পারছেন না ফুকুশিমার মানুষ
১১ মার্চ ২০১৩এরপর তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সরকার ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের ২০ কিলোমিটার এলাকায় থাকা সব বাসিন্দাদের সরে যেতে অনুরোধ করেন৷ এতে প্রায় এক লক্ষ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যায়৷
তবে আদতে ২০ কিলোমিটারের বাইরের লোকজনও নিরাপত্তার কারণে এলাকা ছেড়ে চলে যায়৷
এদের একজন মিকিও নিহাই৷ ৩৮ বছর বয়সি নিহাই'এর স্ত্রী তাদের ছোট্ট দুই মেয়েকে নিয়ে ফুকুশিমা ছেড়ে এখন থাকছেন টৌকিওতে৷ আর নিহাই জীবিকার তাগিদে রয়ে গেছেন ফুকুশিমাতেই৷ কারণ তিনি সেখানে একটি গাড়ি কারখানায় চাকরি করেন৷ অর্থাৎ তাঁর পরিবার দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে৷
যাতায়াত ব্যয়বহুল হওয়ায় নিহাইয়ের পক্ষে মাসে একবারের বেশি টোকিও যাওয়া সম্ভব হয় না৷ তাই মানসিকভাবে কষ্টে আছেন নিহাই৷
এমন কাহিনি ভুরিভুরি৷ তাইতো সরকারি হিসেবে ফুকুশিমা দুর্ঘটনায় কেউ নিহত না হলেও এর কারণে মানুষকে যে দুর্ভোগ পোহাত হচ্ছে তার কোনো শেষ নেই৷
শুরুতে যখন বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছিল তখন ধারণা ছিল, হয়তো বছর দুয়েকের মধ্যে আবার ফেরা সম্ভব হবে৷ কিন্তু আজ দুবছর পার হতে চললেও কবে ফুকুশিমায় ফেরা যাবে তা জানেন না নিহাই৷
যদিও সরকার সহ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলো বলছে যে, ফুকুশিমার পরিবেশে এখন যে তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে তাতে স্বাস্থ্যগত ক্ষতির সম্ভাবনা নেই৷ কিন্তু তারপরও মানুষ আশ্বস্ত হচ্ছে না৷ তারা ফিরে যেতে চাইছেন না৷
লিতাতে গ্রামের মেয়র নোরিও কানো, যিনি ফুকুশিমা ছেড়ে এখন টোকিওতে থাকছেন, তিনি বলছেন ফুকুশিমার পরমাণু চুল্লি ও তার আশেপাশের এলাকা পুরোপুরি তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত করতে লাগতে পারে প্রায় ৩০ বছর৷
ফুকুশিমা এলাকার কৃষক ও মৎসজীবীরাও রয়েছেন বিপদে৷ গবেষণায় তাদের উৎপাদিত ফসল ও মাছ তেজস্ক্রিয়তামুক্ত বলে প্রমাণিত হলেও মানুষ তা কিনতে চাইছে না বলে জানান তারা৷
জেডএইচ / এসবি (এএফপি)