কর্ণাটক: পুরো গান্ধী পরিবার বনাম মোদী-শাহ
১০ মে ২০২৩কর্ণাটকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯টি জনসভা ও ছয়টি রোড শো করেছেন। গত শনিবার তিনি বেঙ্গালুরু শহরে ২৬ কিলোমিটার জুড়ে রোড শো করেন। পিছিয়ে ছিলেন না অমিত শাহও। পুরো রাজ্যঘুরে জনসভা ও রোড শো করেছেন তিনিও। বস্তুত, মোদী-শাহ কর্ণাটকে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেননি।
দ্য হিন্দুর রিপোর্ট বলছে, মোদীর রোড শোতে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বজরঙ্গবলী বা বীর হনুমানের বেশে দুই পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। মন্দিরের দুইশ জন পুরোহিত সেখানে হনুমান চালিশা পড়েছেন। এটা হলো কংগ্রেসের ইস্তাহারের পাল্টা। কংগ্রেস ইস্তাহারে বলেছে, তারা ক্ষমতায় এলে সঙ্ঘ পরিবারের শাখা সংগঠন বজরং দল ও পিএফআই-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে। এরপরই বিজেপি রাজ্যজুড়ে যে প্রচার করেছে, তার অর্থ, কংগ্রেস বজরঙ্গবলীকে অপমান ও অশ্রদ্ধা করেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, হার নিশ্চিত জেনে বিজেপি এই বিভাজনের চেষ্টায় ঝাঁপিয়েছে।
অন্যদিকে কংগ্রেসনেতা রাহুল গান্ধী ১২ দিন কর্ণাটকে পড়েছিলেন। জনসভা করেছেন, রোড শো করেছেন। কর্মীদের সভা করেছেন। দীর্ঘদিন পর কোনো বিধানসভা ভোট নিয়ে রাহুল এতটা সক্রিয় ছিলেন। শুধু রাহুল একা নন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীও প্রচার করেছেন। বহুদিন পর প্রচারে নেমেছেন সোনিয়া। এর আগে অসুস্থতার কারণে তিনি প্রচারে দীর্ঘদিন অংশ নেননি। এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদী কটাক্ষ করে বলেছেন, হার বাঁচাতে সোনিয়াকেও প্রচারে নামতে হলো। তাও কোনো লাভ হবে না।
শুধু গান্ধী পরিবারের তিন নেতা-নেত্রীই নন, গোটা রাজ্য ঘুরে প্রচার করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কর্ণাটক তার নিজের রাজ্য। ফলে এই বর্ষীয়ান কংগ্রেস সভাপতি দিনে গড়ে পাঁচটি করে জনসভা করেছেন।
কর্ণাটকের নির্বাচন নিয়ে একাধিক সমীক্ষা সামনে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে তীব্র লড়াই হচ্ছে। আর এনডিটিভির সমীক্ষা বলছে, কর্ণাটকে ভোটে ২৮ শতাংশ মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো চাকরি না পাওয়া। তাছাড়া জিনিসের দাম ও দুর্নীতি নিয়েও মানুষের ক্ষোভ রয়েছে।
ফলে কর্ণাটকে লড়াই হবে। বিজেপি দক্ষিণ ভারতের একমাত্র রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে নাকি কংগ্রেস আবার এখানে ক্ষমতায় আসতে পারবে, তার ফয়সালা হয়ে যাচ্ছে বুধবার। বেলা তিনটে পর্যন্ত ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছে। শেষ পর্যন্ত ভোটের হার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ হতে পারে বলে দাবি করেছেন বিজেপি-র সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও লিঙ্গায়েত নেতা এবার বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
কংগ্রেস দাবি করেছে, তারা ১৫০টি আসন পাবে। তবে ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় ১১৩টি আসন পেলেই সরকার গঠন করা যাবে।
বিজেপি, কংগ্রেস ছাড়া তৃতীয় পক্ষও আছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার দল জেডি(এস)। তারা এখন নিজেদের প্রভাব অক্ষুন্ন রাখার জন্য লড়ছে।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি)