1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার প্রভাবে ধস ভারতের শেয়ার বাজারে

১২ মার্চ ২০২০

করোনার প্রভাবে ভারতের শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস নামল। বৃহস্পতিবার সকালে শেয়ার বাজার খোলার পর তা তিন হাজার ২০০ পয়েন্ট নীচে নামে৷

https://p.dw.com/p/3ZGqx
মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জছবি: DW/R. Sharma

করোনার থাবা এ বার শেয়ার মার্কেটে। বৃহস্পতিবার শেয়ার বাজার খোলার পর তা ৩ হাজার ২০০ পয়েন্ট নীচে নেমে যায়। দেশের প্রমুখ শেয়ারের দামও অনেকটাই পড়েছে। নিফটি বা দেশের প্রধান ৫০টি শেয়ারের সূচকও ৮১০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭০০। দুই বছরের মধ্যে এই প্রথমবার নিফটি ১০ হাজারের কম হল। বাজার খোলার পর ১৮৭৯টা শেয়ারের দাম কমেছে, ৫৪টি অপরিবর্তিত আছে এবং ১৩৯ টি শেয়ারের দাম বেড়েছে। টাকারও অবমূল্যায়ণ হয়েছে ৭ পয়সা। 

শেয়ার বাজারে এই ধস নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ। প্রশ্ন হল, এই ধসের কারণ কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধান কারণ করোনা ভাইরাস। শেয়ার বিশেষজ্ঞ গৌরব দুয়া বলেছেন, ''বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও করোনাকে মহামারি বলে ঘোষণা করেছে। তার ফলে বিনিয়োগকারীরা চিন্তিত। গোটা বিশ্বেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। ভারতীয় অর্থনীতিতে আগেই মন্দা শুরু হয়েছিল। তার ওপর করোনার আতঙ্ক যুক্ত হওয়ায় এই অবস্থা।'' আইডিবিআই ক্যাপিটালের প্রধান গবেষক এ কে প্রভাকর জানিয়েছেন, ''শেয়ার বাজার এমনিতেই তেজি ছিল না। তার ওপর করোনার প্রভাব পড়েছে। ভারতেও একই অবস্থা হয়েছে।'' 

শেয়ার বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে অ্যামেরিকার নিষেধাজ্ঞা। ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্য বাদে ইউরোপের বাকি দেশের লোকের অ্যামেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তাতে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর অ্যামেরিকায় শেয়ার সূচক ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। জাপানে শেয়ার সূচক পড়েছে চার শতাংশের বেশি। এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন জায়গায় পৌঁছেছে জাপানের শেয়ার বাজার। ভারতও যাবতীয় ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়ছে বলেই বিশেজ্ঞদের একাংশের ধারণা। 

কিন্তু করোনাই কি ভারতীয় অর্থনীতির পতনের একমাত্র কারণ? বিরোধীদের বক্তব্য, সন্দেহ নেই, করোনাশেয়ার বাজার ধসের একটা কারণ। কিন্তু শুধু সে কারণে ভারতীয় অর্থনীতির এই বেহাল দশা নয়। তাঁদের বক্তব্য, সরকার অর্থনীতি সামলাতে পারছে না।  প্রিয়ঙ্কা গান্ধী টুইট করে বলেছেন, ''প্রধানমন্ত্রী সরকার ভাঙানোর খেলা থেকে ফুরসত বার করে যদি এই সব বিষয়েও কথা বলেন, তাহলে ভালো হয়।'' তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইঞা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''শেয়ার বাজারে ধস নামার অন্যতম কারণ করোনা হতে পারে, তবে সেটা ছোট কারণ। আজ না হোক, কাল শএয়ার বাজারে ধস নামতোই কারণ, দেশের অর্থনীতিকে তলানিতে নিয়ে গিয়েছে মোদী সরকার। এ বছর রাজস্ব আদায় অনেক কম হয়েছে। জিএসটি, সিজিএসটি, এসজিএসটি সবই কম আদায় হয়েছে। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে। সরকার তা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্যাঙ্কে পরিশেোধ না দেওয়া ঋণের পরিমাণ। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেলেঙ্কারি এর কারণ।'' সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এখন অজুহাত হিসাবে সব ব্যর্থতার পিছনেই করোনা ভাইরাসকে দায়ী করা হচ্ছে।'' 

এটা ঘটনা, বিরোধীরা সুযোগ পেলেই সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে। আবার এও ঠিক, ভারতীয় অর্থনীতির হাল নিয়ে সম্প্রতি বিশেযজ্ঞরা প্রভূত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছে। উৎপাদন শিল্প থেকে শুরু করে প্রচুর ক্ষেত্র মার খাচ্ছে। এই সব সূচক বুঝিয়ে দিচ্ছে, ভারতীয় অর্থনীতি প্রবল চাপে রয়েছে। ক্রমশ তা মন্দার দিকে চলে যাচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনা। ফলে পরিস্থিতি চিন্তাজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। শেয়ার বাজারেও তার প্রতিফলন ঘটছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। 

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)