এক্স-রে থেকে সিটিস্ক্যান
২৩ নভেম্বর ২০১৫হাড় ভেঙে গেছে? অথবা কেউ কিছু গিলে ফেলেছ? নাকি টিউমার হয়েছে? ডাক্তাররা এক্স রে, আলট্রাসাউন্ড, সিটি অথবা এমআরআই স্ক্যানের মতো নানা ‘ইমেজিং' প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা পরীক্ষা করতে পারেন৷
বহুকাল ধরে শুধু মানুষের লাশের উপর চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষা করা যেত৷ জীবন্ত মানুষের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা আন্দাজের ভিত্তিতে রোগ নির্ণয় করতেন৷
১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ভিলহেল্ম কনরাড ব়্যোন্টগেন আবিষ্কার করেন, যে কিছু যন্ত্র অদৃশ্য রশ্মি বিকিরণ করে – অনেকটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে৷ এই রশ্মির বিস্ময়কর গুণ হলো সহজেই তা নানা বস্তুর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে, আলো যা পারে না৷
এর পরেই ব়্যোন্টগেন তাঁর স্ত্রীর হাতের বিখ্যাত ছবিটি তোলেন৷ তাতে হাড় ও আংটি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে৷ এক্স রে-র আবিষ্কারকে সত্যি চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল৷ ব়্যোন্টগেন নোবেল পুরস্কার পেলেন৷ তাঁর দেখানো পথ শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে বিপ্লব এনে দিল৷
এই প্রথম ডাক্তাররা মানুষের শরীরে ছুরি না চালিয়েও তার ভিতরের অংশ দেখতে পেলেন৷ বিষয়টি আসলে খুবই সহজ৷ এক্স-বিকিরণের ফলে ফটোগ্রাফির প্লেট কালো হয়ে যায়৷ এক্স-রে ও ফটোগ্রাফিক প্লেটের মাঝে কিছু রাখলে তা রশ্মিকে দুর্বল করে দেয়৷ ঠিক যেভাবে কাপড় সূর্যের রশ্মিকে দুর্বল করে তোলে৷ সে কারণে কোনো এক্স-রে ছবিতে হাড় পেশির তুলনায় হালকা দেখায়৷
বহু বছর ধরে গবেষক ও ডাক্তাররা কোনো সতর্কতা ছাড়াই ঢালাওভাবে এক্স-রে ছবি তুলে গেছেন৷ অথচ এক্স রেডিয়েশন অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ায় তা শরীরের কোষের ক্ষতি করতে পারে – এমনকি ক্যানসারেরও কারণ হতে পারে৷ সে কারণে ডাক্তাররা আজকাল কয়েক দশক আগের তুলনায় বিকরণের ভগ্নাংশ ব্যবহার করেন৷
এক্স রে প্রযুক্তিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়ে কম্পিউটার টোমোগ্রাফি সৃষ্টি করা হয়েছে৷ এর আওতায় পরীক্ষার জন্য শরীরের অজস্র এক্স-রে ছবি তোলা হয়৷ তারপর কম্পিউটার তা একত্র করে এক থ্রিডি সংস্করণ সৃষ্টি করে৷
কিন্তু হাড় ভাঙলে আজও সেই সাধারণ এক্স-রে ছবির উপরই ভরসা করা হয়৷