1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উনিশে মে, মাতৃভাষার আরেক লড়াই

১৯ মে ২০২০

১৯৬১ সালের উনিশে মে ভারতের শিলচরে বাংলাভাষার জন্য শহীদ হয়েছিলেন ১১জন৷ উনিশ উদযাপন, যা সেই অঞ্চলের বাঙালির হৃদয় জুড়ে, তা এখন কীভাবে পালিত হচ্ছে?

https://p.dw.com/p/3cRwI
ভারতের শিলচরে নিহত দুজন ভাষা শহীদছবি: DW/S. Surita

অসমীয়া ও ইংরেজির পাশাপাশি দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে চাই বাংলাও- এই দাবি নিয়ে পথে নেমেছিলেন তাঁরা, যারা আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষাগোষ্ঠীর সদস্য৷ কিন্তু প্রশাসনের পক্ষে এই দাবির উতরে মিলেছিল বন্দুকের গুলি৷ ঝরে গিয়েছিল ১১টি প্রাণ৷ শুধু ১৯৬১তেই নয়, ১৯৭২, ১৯৮৬তেও শহীদ হন বাঙালিরা৷ মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে সেই অঞ্চলের বিষ্ণুপ্রিয়া নারী সুদেষ্ণা সিনহাও৷

কিন্তু তারপর থেকে গত দুই দশক ধরে আসামের বরাক উপত্যকা, যা কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলা নিয়ে তৈরি, হয়ে উঠেছে মাতৃভাষার চেতনা উদযাপনের প্রাণকেন্দ্র৷ প্রতি বছর উনিশে মে উপলক্ষে গোটা উপত্যকা সেজে ওঠে উৎসবের আমেজে৷ গোটা উপত্যকাজুড়ে নবীন-প্রবীণ সব প্রজন্ম একসাথে মিলিত হয় সেখানে৷

Gandhibag Shahid Bedi, Silchar, Indien
শিলচরের গান্ধীবাগের শহীদ বেদিছবি: DW/S. Surita

যে শিলচর রেলস্টেশনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বিশ্বের প্রথম নারী ভাষা শহীদ কমলা ভট্টাচার্যসহ আর ১০ জন, সেই রেল চত্বরকে ঘিরে উদযাপিত হয় উনিশ৷ শুধু তাই নয়, উনিশের মাতিতে একুশে ফেব্রুয়ারির দেশের বার্তা পৌঁছে দিতে গত কয়েক বছর ধরে সেই উদযাপনে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন ইউসুফ, শিমূল ইউসুফ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষে হাসান আরিফ, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, সিলেটের কথাকলি নাট্যগোষ্ঠী, জনপ্রিয় গানের দল ‘জলের গান’সহ বহু শিল্পীরা৷ নিয়ম মেনে উনিশে মে আজকাল পালিত হচ্ছে বাংলাদেশে বিভিন্ন আকারে, পরিসরে৷ পশ্চিমবঙ্গেও প্রতি বছর স্মরণ করা হয় উনিশের শহীদদের৷

Silchar, Indien
শিলচরের বাড়িতে শহীদদের স্মরণছবি: DW/S. Surita

করোনাকালে উনিশ উদযাপন

ঘরবন্দী সময়েও থেমে নেই উনিশ-স্মরণ৷ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের ফেসবুক ও ইউটিউব পেজ থেকে লাইভে এসে গান, নাচ, কবিতার পাশাপাশি রাজনৈতিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা চলছে৷ অংশগ্রহণ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ৷ কিন্তু উনিশের মঞ্চ, ‘ভাষা শহীদ স্টেশন শহীদ স্মরণ সমিতি’, এই বছর উনিশ উদযাপনের আগে থেকেই নেমেছিলেন অন্য কাজে৷ শুধু ভাষা রক্ষা নয়, পাশাপাশি ঐতিহাসিক রেল স্টেশন চত্বরে থাকা দরিদ্রদের খাবারের ব্যবস্থার জন্য একটি ‘কমিউনিটি কিচেন’ তৈরি করেছেন তাঁরা৷ শিলচরের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ নিজেদের তৈরি মাস্ক বিতরণ করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ এরকম রয়েছেন আর অনেক সংগঠনই৷

এবারের উনিশে মে’তে নেই সকাল সকাল ‘উনিশের পথচলা’, রাস্তায় আলপনা বা দিনভর অনুষ্ঠানের হিড়িক৷ বদলে আছে শারীরিক দূরত্ব, নিজের ভাষাগোষ্ঠীর পাশাপাশি পাশের ভাষাগোষ্ঠীর মানুষের প্রতিও সাহায্যের হাত বাড়ানোর একাধিক উদ্যোগ, ও কাঁটাতার নির্বিশেষে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উনিশের বার্তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া৷ এভাবেই উদযাপিত হচ্ছে এবারের উনিশ৷

২০১৮ সালের মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য