ইলেক্ট্রিক বর্জ্যের লাভজনক ব্যবসা
২৭ জানুয়ারি ২০২১জার্মানিতে বছরে প্রায় দশ লাখ টন ইলেকট্রিক বর্জ্য তৈরি হয়৷ যেন সোনার খনি! যেমন কম্পিউটারের সার্কিট বোর্ডে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়৷ জার্মানির রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট ‘আওরুবিস' এর ম্যানেজার আন্দ্রেয়াস নোলটে বলেন, তামার চেয়ে সোনা ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী৷ সেকারণে কম্পিউটারের সার্কিট বোর্ডে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়েছে৷ উচ্চমানসম্পন্ন ও দ্রুত তথ্য প্রেরণ নিশ্চিত করতে এটা করা হয়েছে৷ প্লাগ কানেকটরগুলোর প্রযুক্তিগত মান ভালো হওয়া জরুরি, নইলে সময়ের সঙ্গে অক্সিডেশন হতে পারে৷ সোনা সেই অক্সিডেশন রুখে ডিভাইসের জীবনকাল পর্যন্ত সেরা কানেক্টিভিটির নিশ্চয়তা দেয়৷''
ল্যাপটপ, স্মার্টফোনসহ বেশিরভাগ ইলেক্ট্রিক পণ্য সোনা ছাড়া কাজ করে না৷
পাঁচটি কম্পিউটার থেকে এক গ্রাম সোনা পাওয়া যায়৷ শুনতে কম মনে হলেও আসলে এটা অনেক৷ কারণ এই পরিমাণ সোনা পেতে প্রায় দুই টন আকরিক খনন করতে হয়৷ এতে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয় তা গাড়ি চালিয়ে পুরো পৃথিবী তিনবার ঘুরে আসার সমান৷
কিন্তু এভাবে বর্জ্য থেকে সোনা আহরণ কি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক? এবং এভাবে কী পরিবেশের ক্ষতি কমানো যায়? তা জানতে চলুন জার্মানির আওরুবিস রিসাইকেল প্ল্যান্ট থেকে ঘুরে আসি৷
বর্জ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রন আর প্লাস্টিক থাকে৷ প্রথমে সেগুলো আলাদা করা হয়৷ এরপর ১,৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ধাতুর মিশ্রন গলানো হয়৷
সোনা ভারী ধাতু হওয়ায় গলিত ধাতুর মিশ্রনে একেবারে নীচের দিকে চলে যায়৷ সেখানে রূপা আর তামাও থাকে৷ পরে হালকা ধাতু থেকে তাদের আলাদা করা হয়৷
গলিত মিশ্রন ঠাণ্ডা করার পর তামার প্লেট তৈরি হয় যেখানে সোনাও থাকে৷ নোলটে বলেন, ‘‘দুটি প্লেটের ওজন প্রায় ৮০০ কেজি৷ এগুলোতে প্রায় এক আউন্স বা ৩১.১ গ্রাম সোনা থাকে৷ যতটা সম্ভব কম ক্ষতি করে সোনা বের করে নেয়া আমাদের লক্ষ্য৷''
সেটা নিশ্চিত করতে অনেক রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার করে আওরুবিস৷ প্লেটগুলোকে বিভিন্ন অ্যাসিডের মধ্যে চুবানো হয়৷ এভাবে প্রথমে তামা, পরে রূপা ও সবশেষে সোনা আলাদা করা হয়৷
অবশ্য সোনা আহরণ প্রক্রিয়ার শেষ অংশটি ঠিক কীভাবে ঘটে তার ছবি তুলতে দেয়নি আওরুবিস৷ কারণ এটা তাদের কমার্শিয়াল সিক্রেট!
পাট্রিক ইয়ুটে/জেডএইচ