ইইউতে ম্যার্কেলের বন্ধু ও শত্রুরা
শরণার্থী সংকটকে ঘিরে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারের মধ্যে মতানৈক্য চরমে পৌঁছেছে৷ একই বিষয়ের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও ম্যার্কেলের বন্ধু ও শত্রু হয়ে উঠেছেন৷
বন্ধু
ম্যার্কেলের রাজনৈতিক বন্ধু বলতে যদি কাউকে বোঝায় তবে সেটা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ ম্যার্কেলের মতোই তিনি শরণার্থী সংকটের ইউরোপীয় সমাধানের পক্ষে ছিলেন৷ ইইউ’র নেতারা সম্প্রতি ব্রাসেলসে এক বৈঠকে সংকট সমাধানের লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছান৷
দরদি
সম্প্রতি ইটালি ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার হওয়া শরণার্থীদের একটি জাহাজ তাদের উপকূলে ভেড়ার অনুমতি দেয়নি৷ পরে স্পেন সেই জাহাজ তাদের দেশে ভিড়তে দেয়৷ এই ঘটনায় স্পেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজকে শরণার্থী ইস্যুতে ম্যার্কেলের নীতির সমর্থক বলে মনে হতে পারে৷ তবে তিনিও বলেছেন, সংকট সামলাতে তাদের সহায়তা প্রয়োজন৷
মধ্যস্থতাকারী
ম্যার্কেলের মতো ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে-ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সীমান্ত খোলা রাখার পক্ষে৷ তবে তাঁর নিজের দেশেই শরণার্থীদের বিরুদ্ধে বৈরী মনোভাব বাড়ছে৷
কৌশলী
ঋণ-সংকট ইস্যুতে সম্প্রতি ম্যার্কেলকে গ্রিসের বিরুদ্ধে নমনীয় হতে দেখা গেছে৷ ফলে শরণার্থী ইস্যুতে ম্যার্কেলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস৷ এর মাধ্যমে তিনি হয়ত ঋণ ইস্যুতে কিছুটা ছাড় পাওয়ার আশা করছেন৷
কট্টরপন্থি
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী লার্স রাসমুসেনকে দেখতে কট্টরপন্থির মতো মনে না হলেও অভিবাসন ইস্যুতে তিনি সেরকম মনোভাবই দেখিয়েছেন৷ আশ্রয়প্রার্থীদের ডেনমার্কে ঢুকতে না দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি যে কঠোর মনোভাব দেখিয়েছেন, তা ইইউ’র অন্য কোনো সরকার করেনি৷
প্রতিদ্বন্দ্বী
ব্যক্তিগত পর্যায়ে ম্যার্কেলের সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার দেখান অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুয়রৎস৷ তবে শরণার্থী ইস্যুতে যে তিনি ম্যার্কেলের খোলা দুয়ার নীতির বিরোধী, তা সরাসরিই জানিয়েছেন৷ ম্যার্কেলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান ও বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস শ্যোডারের সঙ্গে তাঁর সখ্য রয়েছে৷
সমস্যা সৃষ্টিকারী
ইইউ নেতারা সম্প্রতি যে চুক্তিতে পৌঁছেছেন, শুরুতে তা ভন্ডুল করে দিতে চেয়েছিলেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টে৷ কারণ, সম্প্রতি দায়িত্ব নেয়া কন্টে তাঁর ভবিষ্যতের জন্য লিগা পার্টির উপর নির্ভরশীল৷ এই দলের নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাটেও সালভিনি আর কোনো শরণার্থী না নেয়ার পক্ষে৷
উদাসীন
২০১৫ সালে ম্যার্কেল যখন শরণার্থী ইস্যুতে খোলা দুয়ার নীতি গ্রহণ করেছিলেন, তখন ম্যার্কেলের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছিলেন হাঙেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান৷ তখন তিনি বলেছিলেন, শরণার্থী সংকট ম্যার্কেলের সমস্যা৷