আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনায় মিয়ানমার ও চীন
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩শীতল যুদ্ধ চলার সময় কমিউনিজমের প্রসার ঠেকাতে ১৯৬৭ সালে আসিয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ এর বর্তমান সদস্যরা হচ্ছে ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম৷ এই দেশগুলোতে ৬৫ কোটির বেশি মানুষ বাস করেন এবং সম্মিলিতভাবে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি৷
২০২১ সালে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর দেশটির সামরিক নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসিয়ান৷ তবে মিয়ানমার সংকটের সমাধানে আসিয়ান সদস্যদের এক হতে দেখা যাচ্ছে না৷ কারণ ইন্দোনেশিয়া চায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার সহিংসতা বন্ধ করে আলোচনা শুরু করুক৷ কিন্তু অন্যদিকে জান্তা সরকারের সঙ্গে থাইল্যান্ডের আলাদা সম্পর্ক রয়েছে৷ ফলে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন শেষে প্রকাশের জন্য যে বিবৃতির খসড়া তৈরি করা হয়েছে সেখানেও মিয়ানমার বিষয়ে আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যমত দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে এএফপি৷
এদিকে, সম্প্রতি চীন একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে৷ এতে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি বড় অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন্স চীনের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ফলে দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে অত্র অঞ্চলে চীনের শক্তিবৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হচ্ছে৷
বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্বও আসিয়ানের মধ্যে থাকা ফাটল সামনে নিয়ে এসেছে৷ ফিলিপাইন্স ও ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে রয়েছে৷ আর চীনকে সমর্থন করছে কম্বোডিয়া৷
তবে আসিয়ান অঞ্চলে চীন শক্তি দেখানোয় ঐ অঞ্চলে থাকা মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা৷
আসিয়ান সম্মেলনের পর বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ায় পূর্ব-এশিয়া সামিট হবে৷ সেখানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন৷
আসিয়ান সম্মেলন শুরুর আগে সোমবার ইন্দোনেশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি নাতালেগাওয়া স্বীকার করেন যে, আসিয়ান যে অত্র অঞ্চলে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের যোগ্য, তা বিশ্ব নেতাদের বোঝানোর জন্য এখনও লড়াই করছে সংস্থাটি৷ তিনি বলেন, ‘‘আসিয়ানের মৃত্যু সংবাদ আসলে বহুবার লেখা হয়ে গেছে৷ তবে সেইসময়গুলোতে আসিয়ান কোনো না কোনোভাবে নিজেকে নতুন করে উদ্ভাবন করতে এবং এর প্রাসঙ্গিকতা পুনরায় তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে৷''
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)