আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পেমেন্ট কার্ডের অনুমতি জার্মান সংসদের
১৪ এপ্রিল ২০২৪গত সপ্তাহে খসড়া আইন তৈরির পর চলতি সপ্তাহে আইনপ্রণেতারা পেমেন্ট কার্ড চালুর পক্ষে ভোট দেন৷ তবে জোট সরকারের এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে লেফট পার্টি এবং সিডিউ/সিএসইউ৷
মূলত আশ্রয়প্রার্থীরা কোথায় এবং কীভাবে তাদেরকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায়সরকারের দেয়া অর্থ খরচ করছে, তা জানতেই এমন আইন প্রণয়ন করেছে সরকার৷
জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের ক্ষমতাসীন দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস৷ কট্টর ডানপন্থি দল এএফডিরও এমন চেষ্টায় সম্মতি রয়েছে৷
এই কার্ড চালুর পেছনে অন্যতম উদ্দেশ্য এটি নিশ্চিত করা যে, রাষ্ট্র সমর্থিত ব্যক্তিরা এই অর্থ যে কাজে দেয়া হচ্ছে, সে কাজে যেন ব্যবহার করেন৷ যেমন, তাদের সাপ্তাহিক মুদির দোকানের খরচ, কিংবা জার্মানিতে চলার জন্য৷ বাড়িতে টাকা পাঠানোর জন্য এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে না।
যেভাবে কাজ করবে পেমেন্ট কার্ড
সংসদে বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার বলেন, পেমেন্ট কার্ডের মাধ্যমে প্রতিদিনের কেনাকাটা এবং সেবার অর্থ প্রদান করবে আশ্রয়প্রার্থীরা৷ যেমন, মুদির দোকানের কেনাকাটা, নাপিতের বিল প্রদান, কিংবা পরিবহণ টিকিট কাটা ইত্যাদি৷
তাছাড়া এই কার্ড দিয়ে দেশের বাইরে টাকা পাঠানো যাবে না৷ তবে এই কার্ড দিয়ে খুব সীমিত পরিসরে নগদ অর্থ উত্তোলন করা যাবে৷
আশ্রয়প্রার্থীরা সরকারের দেওয়া অর্থ যেন তাদের পরিবার-পরিজনের বা বন্ধু-বান্ধবের কাছে পাঠাতে না পারেন, কিংবা পাচারকারীদের কাছে পাঠাতে না পারেন সেই ব্যবস্থার অংশ হিসেবেই ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে সরকার৷
আইন প্রণেতাদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা আশ্রয় চান এবং যাদের জার্মানিতে সহযোগিতা প্রয়োজন, তাদের বিষয়ে সম্পূর্ণ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে৷ তবে এই কার্ড চালুর বিষয়টি বলছে যে, সামাজিক সুযোগের সুবিধার আওতায় পাওয়া এই অর্থ মানবপাচারকারীদের পাঠানো যাবে না৷
উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকরার আশ্রয়প্রার্থীরা কত টাকা ক্যাশ উঠাতে পারবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷
আইনের পক্ষে-বিপক্ষে যারা
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবং জার্মানির ১৬টি রাজ্যের প্রধানেরা এই ব্যবস্থার সাথে গত নভেম্বর থেকেই সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করে আসছেন৷
যদিও পেমেন্ট কার্ড চালুর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন প্রয়োজন আছে কিনা এবং এই আইনের কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছে সরকারের একটি অংশ৷
এদিকে হামবুর্গ, বাভারিয়াসহ কিছু রাজ্য এর মাঝে পরীক্ষামুলকভাবে এমন কার্ড চালু করেছে৷
শুক্রবার সংসদের নিম্নকক্ষে ক্ষমতাসীন এসপিডি-গ্রিন-এফডিপির বেশির ভাগ সদস্যই আইনটির পক্ষে ভোট প্রদান করেছে৷ তাছাড়া কট্টর ডানপন্থি দল এএফডিও আইনটি সমর্থন করেছে৷
তবে ক্ষমতার বাইরে থাকা লেফট পার্টি এবং রক্ষণশীল দল সিডিউ/সিএসইউ আইনটির বিপক্ষে ভোট দেয়৷ তারা বলছেন, আশ্রয়প্রার্থীরা যেন ক্রেডিট কার্ড থেকে প্রতিমাসে ৫০ ইউরোর বেশি নগদ ওঠাতে না পারে৷
এদিকে জার্মান প্যারিটি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন আইনটির বিপক্ষে মতামত প্রদান করেছে৷ তারা বলছে, এমন আইন শরণার্থীদের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার৷
আরআর/এসিবি (ডিপিএ, ইপিডি, কেএনএ)