আদানির বিদ্যুতের আমদানিমূল্য অনেক কমাতে চায় বাংলাদেশ
২ ডিসেম্বর ২০২৪আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য গত সপ্তাহে একজন আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের হাইকোর্ট চুক্তিটি পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দেন৷ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আদালত আদেশ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ৷ এর আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলে আদানি গ্রুপ৷ এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গতবছর উৎপাদনে যায়৷ সেখান থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার এক দশমাংশ পূরণ করে৷
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘চুক্তিতে অসঙ্গতি থাকলে আদানির সঙ্গে পুনরায় আলোচনা হবে৷ আর দুর্নীতি ও ঘুসের মতো অনিয়ম হয়ে থাকলে চুক্তিটি বাতিল করা হবে৷''
তিনি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ভারতে যে করছাড় পাচ্ছে তার উপকার বাংলাদেশ না পাওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে আদানি গ্রুপকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আদানি গ্রুপ সোমবার রয়টার্সকে জানায়, বাংলাদেশ সরকার যে চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করছে তা তারা জানে না৷
সম্প্রতি আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুস লেনদেনের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ৷ আদানি এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও এরই মধ্যে ভারতের একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার ঘোষণা দিয়েছে৷ সেই সঙ্গে আদানি গ্রুপে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে ফ্রান্সের তেল-গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান টোটাল এনার্জি৷
তবে ফাওজুল কবির খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আদানির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না৷
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যেসব বিদ্যুৎ চুক্তি হয়েছে সেগুলো এখন পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করে দেওয়া একটি কমিটি৷ চুক্তিগুলো যথাযথভাবে হয়েছে কি না, চুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে কি না, জাতীয় স্বার্থ বিনষ্ট হয়েছে কি না, এসব বিষয় যাচাই করে দেখছে কমিটি৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স)