অস্ট্রেলিয়ায় খবর প্রচার বন্ধ ফেসবুকের
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১সোশ্যাল নেটওয়ার্ক আছে, কিন্তু খবর নেই। একুশ শতকের আধুনিক প্রজন্ম এমনটা ভাবতেই পারে না। অথচ ঠিক সে ঘটনাই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ায়। বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা ফেসবুক খুলেছেন, কিন্তু সেখানে একটিও খবর দেখতে পাননি তাঁরা। এমনকী, সরকারি এবং জরুরি পরিষেবার পেজগুলিও খালি ছিল। সেখানে কোনোরকম আপডেট দেওয়া ছিল না।
দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গে লড়াই চলছে ফেসবুক এবং গুগলের। অভিযোগ, গত ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি আইন পাশ হয়েছে। যেখানে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে খবরের প্রচার নিয়ে একাধিক বিষয় বলা হয়েছে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে আইনটি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে। ফেসবুকের বক্তব্য, ওই আইন জারি হলে তাদের পক্ষে তা মানা সম্ভব নয়। গুগলও আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। বস্তুত তারই জেরে বুধবার সকাল থেকে ফেসবুক অস্ট্রেলিয়ায় খবর প্রচার বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ, তারা নিজেরাও কোনো খবরের প্রচার করবে না। ফেসবুক ব্যবহারকারীরাও কোনো খবর শেয়ার করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সরকারি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তাদের খবরাখবর প্রচার করে থাকে। বুধবার সকাল থেকে সেই পেজগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের এই কাজে সমস্যায় পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ। বহু মানুষ ইদানীং খবরের কাগজ রাখেন না। টেলিভিশনও দেখেন না। তাঁরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই দিনের সংবাদ দেখে নেন। বুধবার থেকে আচমকাই তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থা এবং সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ কোভিড পরিস্থিতির আপডেট ফেসবুক পেজে দিত, বুধবার থেকে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরকারি দমকল বিভাগের বুশ ফায়ার সংক্রান্ত খবরও বুধবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ট্রেসারার জোস ফ্রাইডেনবার্গ জানিয়েছেন, বুধবার সকালেই ফেসবুকের প্রধান মার্ক সাকারবার্গের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ এবং বিরোধী রাজনীতিবিদেরা জানিয়েছেন, যে প্রক্রিয়ায় ফেসবুক আচমকা খবর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে তা অনভিপ্রেত। একদিকে কোভিড, অন্যদিকে বুশ ফায়ারে জর্জরিত অস্ট্রেলিয়া। মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত আপডেট দেখেন। কিচ্ছু না জানিয়ে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা হয়েছে।
গুগল অবশ্য ফেসবুকের রাস্তায় হাঁটেনি। সরকার এবং সংবাদসংস্থাগুলির সঙ্গে তারা আলোচনা চালাচ্ছে। গুগল অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, নতুন আইন বলবৎ হলে তাদের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা সম্ভব নয়। তে ফেসবুকের মতো চরম সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি তারা।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)