1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমা, সব প্রিমিয়াম দিতেন পার্থ

২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

এক-দুইটি নয়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জীবনবিমা ছিল ৩১টা। তার প্রিমিয়াম দিতেন সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

https://p.dw.com/p/4H5b1
চার্জশিটে ইডি জানালো, অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতেন পার্থ।
চার্জশিটে ইডি জানালো, অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতেন পার্থ। ছবি: Prabhakar Mani Tewari/DW

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতা প্রমাণ করতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-র হাতিয়ার হলো জীবনবিমা প্রিমিয়ামের রশিদ। অর্পিতার নামে ৩১টি জীবনবিমা ছিল। তার সম্মিলিত প্রিমিয়ামের পরিমাণ হলো দেড় কোটি টাকা। সেই অর্থের পুরোটাই দিতেন সাবেক মন্ত্রী বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে থাকা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেলফোন  বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। তারপর তা ফরেনসিকে পাঠানো হয়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ডিলিট করা মেসেজ খুঁজে বের করেন। সেখান থেকেই দেখা য়ায়, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় অর্পিতার ৩১টি বিমা পলিসির প্রিমিয়াম দিতেন। তারপর ব্যাঙ্কের গিয়ে সেই তথ্য যাচাই করেন ইডি অফিসাররা।

অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাদ্য়ায়ের নামে ১০৩ কোটির সম্পত্তির হিসাব দিল ইডি।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাদ্য়ায়ের নামে ১০৩ কোটির সম্পত্তির হিসাব দিল ইডি। ছবি: Satyajit Shaw/DW

দেখা যায়, ২০১৫ সালে পলিসিগুলি করা হয়। সাত বছর ধরেই পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় প্রিমিয়াম দিয়েছেন। অধিকাংশ পলিসিতে পার্থকেই নমিনি করা হয়েছে। তবে এতগুলি বিমা পলিসি কেন, তার জবাব অবশ্য ইডির চার্জশিটে নেই। কিন্তু এই তথ্য দিয়ে ইডি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, পার্থর সঙ্গে অর্পিতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। জেরার সময় পার্থ বলেছিলেন, অর্পিতার সঙ্গে তার সম্পর্ক আদৌ ঘনিষ্ঠ নয়।

মোট ১৭২ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। সেই সঙ্গে তারা ট্রাঙ্কে ভরে নথিপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। চার্জশিটে উল্লেখ আছে, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে তল্লাশি চালিয়ে ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং পাঁচ কোটি আট লাখ টাকার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া বেশ কিছু ফ্ল্যাট, বাগানবাড়ি, জমি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। সবমিলিয়ে পার্থ এবং অর্পিতার নামে থাকা১০৩ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকার।

ইডির অভিযোগ এসএসসি দুর্নীতি এবং, চাকরি বিক্রির টাকায় এই সম্পত্তি কেনা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। শতাধিক ভুয়া সংস্থার মাধ্যমেও লেনদেন হয়েছে বলে ইডির অভিযোগ। অনেকের নামে সংস্থা খোলা হয়েছে। তাদের সামান্য কয়েক হাজার টাকা দেয়া হত। তারা যে সংস্থার ডিরেক্টর সেটাই জানতেন না বলে ইডির কাছে জানিয়েছেন।

মোদী অপব্যবহার করছেন না: মমতা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সিবিআই সহ তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার করছেন, তা তিনি বিশ্বাস করেন না। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, ''এসব বিজেপি-র নেতারা করাচ্ছেন। সিবিআই আগে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে আছে।''

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথাগুলি বলেছেন রাজ্য বিধানসভায়। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অতিসক্রিয়তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আনা প্রস্তাব ১৮১-৬৪ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। সেখানেই মমতা ইডি নিয়ে বলেছেন,  ''সকাল-বিকেল নোটিশ দিচ্ছে। মাঝরাতে বাড়ি চলে যাচ্ছে।''

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ''এরা ডিক্টেক্টর। হিটলার-স্ট্যালিন-মুসোলিনি। প্রধানমন্ত্রীকে আমি সম্মান করি। আপনি এদের সামলান।''

মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই মন্তব্য নিয়ে সিপিএমের মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ''মোদীদেশে গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরেছেন। তাকে তো মুখ্যমন্ত্রীর ভালো লাগবেই। পশ্চিমবঙ্গে তো উনি এভাবেই চলেন।'' রাজ্য়ের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ''মোদী জিরো টলারেন্সের নীতি নিয়ে চলেন। তাই মমতা ও তার ভাইপো বাঁচতে পারবেন না।''

বাম ও কংগ্রেসের  নেতারা বলেছেন, চিরকালই মমতা ভালো বিজেপি ও খরাপ বিজেপি- এই নীতি নিয়ে চলেন। তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি বাঁচতে চাইছেন।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, টিভি৯, আনন্দবাজার)