অভুক্তর সংখ্যা দ্বিগুণ হবে, আশঙ্কায় জাতিসংঘ
২২ এপ্রিল ২০২০করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে। তারই জেরে বাড়ছে খেতে না পাওয়া মানুষের সংখ্যা। মঙ্গলবার জেনিভায় ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছে জাতি সংঘের বিশ্ব খাদ্য পরিকল্পনার আধিকারিকরা। তাঁদের হিসেব, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ১৩ কোটি ৫০ লাখ। করোনার প্রকোপে সংখ্যাটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অর্থাৎ, প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ খাদ্যের অভাব বোধ করবেন। দ্রুত এই সমস্যা মোকাবিলায় পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতি সংঘ। অন্য দিকে, বুধবার সকালে বিশ্ব জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার এক তৃতীয়াংশই অ্যামেরিকায়।
করোনার প্রভাবে বাড়ছে খাদ্য সংকট। আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তাদের হিসেব অনুযায়ী এ বছর গোটা বিশ্বে বুভুক্ষু মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়বে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিশ্ব আরও এক ভয়াবহ চিত্র দেখবে বলে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য সংক্রান্ত কমিটিরআধিকারিকরা। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্ব জুড়েই অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতি সংঘের ওই কমিটির আশঙ্কা, অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী দেশগুলি মন্দা সামলে নিলেও অপেক্ষাকৃত গরিব এবং অত্যন্ত গরিব দেশগুলিতে এর প্রভাব প্রবল ভাবে পড়বে। বহু দেশেই গরিব মানুষ তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। কৃষকরা বিক্রি করে দিচ্ছেন লাঙল এবং গরু। এই বিষয়গুলিই স্পষ্ট করে দিচ্ছে, কোন পরিণামের দিকে যাচ্ছে পৃথিবী।
এ দিকে এই পরিস্থিতির মধ্যেই অভিবাসন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। আপাতত ৬০ দিনের জন্য তা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে এর মধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে অ্যামেরিকায়। ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, করোনা সংকটের গোড়া থেকেই নিজের ভুল ঢাকতে অন্যদের দায়ী করেছেন ট্রাম্প। এই ঘটনাও তারই আরও এক প্রমাণ। যদিও ট্রাম্পের যুক্তি দেশের অর্থনীতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আশার কথা, ইউরোপে করোনার প্রভাব ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। ইটালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা গত এক মাসের নিরিখে যথেষ্ট কম। এখনও পর্যন্ত ইটালিতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার। স্পেন এবং ফ্রান্সেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। অ্যামেরিকাতেও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কমেছে। তবে নিউ ইয়র্কের পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। দীর্ঘদিন ধরেই নিউ ইয়র্কের গভর্নর অভিযোগ করছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসন প্রয়োজন মতো টেস্ট কিট দিচ্ছে না। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বুধবার থেকে প্রতিদিন নিউ ইয়র্কে ৪০ হাজার পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অ্যামেরিকায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৪০ জনের। আক্রান্ত আট লাখ ১৯ হাজার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ লাখ। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার জনের।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)